![]() |
আমার ছেলেবেলা (Amar Chelebela) |
অনুশীলনীর উত্তর
১। রবীন্দ্রনাথের সেজদাদা কাকে, কী বলতেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথের সেজদাদা রবীন্দ্রনাথকে বলতেন, "আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি, তারপরে ইংরেজি শেখার পত্তন"।
২। ব্রজেশ্বর কে? তার চেহারার বর্ণনা দাও।
উত্তর: ব্রজেশ্বর ছিলেন সকল চাকরদের সর্দার। ব্রজেশ্বরের চুল ও গোঁফ কাঁচা-পাকা মেশানো ছিল। মুখের পর টান পড়া শুকনো চামড়া। গম্ভীর মেজাজ। কড়া গলা, কথা বলে চিবিয়ে চিবিয়ে। এছাড়াও তার ঘাড় একটু বাঁকা যা তার কথা বলার ভঙ্গিকে উন্নত করত।
৩। রবীন্দ্রনাথের কম খাওয়ার অভ্যাস হয়েছিল কীভাবে?
উত্তর: চাকর সর্দার ব্রজেশ্বরের খাবারের প্রতি ভীষণ লোভ ছিল। আগে থেকে কখনোই সে ছেলেদের খাবার গুছিয়ে রাখত না। সবাই খেতে বসলে একটা একটা লুচি দুলিয়ে দুলিয়ে জিজ্ঞেস করত, "আর দেব কি?” তার বলার ভঙ্গিমা দেখে রবীন্দ্রনাথ প্রায়শই না বলতেন। তারপর যে আর পীড়াপীড়ি করত না। লুচি, তরকারি, দুধ প্রভৃতি সব খাবারই সে তার শেলফওয়ালা একটি আলমারির মধ্যে লুকিয়ে রাখত। এইভাবে দীর্ঘদিন ধরে পুরো খাবার না পেয়ে রবীন্দ্রনাথের কম খাওয়ার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল।
৪। ছেলেবেলায় রবীন্দ্রনাথের শরীরের অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: ছেলেবেলায় পরিপূর্ণ খাবার না খেয়ে রবীন্দ্রনাথের দিব্যি সয়ে গেছিল, শরীর কাহিল হয়নি যে ছেলেরা যথেষ্ট পরিমাণ খেতে পেত, তাদের থেকেও রবীন্দ্রনাথের শরীরে বেশি জোর ছিল শরীন এতটাই মজবুত ছিল যে স্কুল পালাবার জন্য শরীরের ওপর কোনো অত্যাচার করলেও কোনো রো- হত না। জুতো জলে ভিজিয়ে সারাদিন পরলেও সর্দি হত না। এমনকি কার্তিক মাসে খোলা ছাদে শুভে জামা ভিজে গেলেও সর্দি কাশি হত না। জ্বরে ভোগা বা ম্যালেরিয়ার কথা তো তার মনেই নেই শরীরের কোথাও ফোঁড়া-ফুসকুড়ি পর্যন্ত হয়নি কখনও। এককথায় তিনি নিরোগ শরীরের অধিকারী ছিলেন।
৫। 'না থাকে তো তাকে ফিরিয়ে আনার দরকার নেই।'-কোন জিনিস না থাকার কথা বলা হয়েছে? বক্তা কেন সেই জিনিসকে "ফিরিয়ে আনার দরকার নেই" বলেছেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলায় বাজারে চকোলেট পাওয়া যেত না। সেই সময় পাওয়া যেত এক পয়সা দামের গোলাপি রেউড়ি, ভাজা মশলার ঠোঙা, সস্তা দামের তিলের গজা ইত্যাদি। এই সমস্ত খাবার বর্তমানে না থাকার কথা বলা হয়েছে।
রেউড়ি নামে এক প্রকার তিলে গজার কথা বলা হয়েছে। এই জিনিসটা সাধারণ তৈরি হত চিনি ও তিল দিয়ে তখন বাজারে চকলেট আসেনি। তাই বাচ্চারা এই তিলে গজা রেউড়ি খেত ও পকেটে রেখে দিত, কিন্তু এর একটা বৈশিষ্ট্য ছিল এগুলি খোলা বাতাসে রেখে দিলে কিছুক্ষণ পরে গলে যেত ও পকেট চটচটে করে দিত। তাই লেখক এই অস্বস্তিকর চটচটে গজা আর ফিরিয়ে আনার দরকার নেই বলেছেন। এই সমস্ত খাবার গরিব শ্রেণির খাদ্য এখনকার ধনী লোকেরা এইসব খাবার খায় না তাই তাকে কবি ফিরিয়ে আনতে বারণ করেছেন।
৬। 'কিন্তু ওরই মধ্যে একটা খুঁত ছিল গুরুগিরিতে।'-এখানে কার কথা বলা হয়েছে? তাঁর গুরুগিরিতে কী খুঁত ছিল?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ রচিত স্মৃতিচারণা মূলক রচনা 'আমার ছেলেবেলা' থেকে গৃহীত আলোচ্য অংশ রবীন্দ্রনাথের শৈশবের চাকর সর্দার ব্রজেশ্বরের কথা বলা হয়েছে।
ব্রজেশ্বরের খাবারের প্রতি একটা চাপা লোভ ছিল-এটাই তাঁর গুরুগিরিতে খুঁত।