![]() |
আঞ্চলিক শক্তির উত্থান (Ancholik Soktir Utthan) |
আঞ্চলিক শক্তির উত্থান প্রশ্ন উত্তর
উত্তরঃ ব্রিটিশ গভর্নর-জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি চালু করেন।
২) ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কবে হয়েছিল? এর কারণগুলি কি কি ছিল ?
উত্তরঃ ইংরাজি ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে এবং বাংলা ১১৭৬ বঙ্গাব্দে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর হয়েছিল।
ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের কারণগুলি হল:
- অতি বৃষ্টি ও বন্যা।
- অনাবৃষ্টি।
- ধানের ফসলের ব্যর্থতা ।
- গুটিবসন্ত মহামারী।
- কৃষকদের অভিবাসন ।
- ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার ত্রুটি।
- খাদ্যবাজারে দালাল ফড়িয়া শ্রেণীর দৌরাত্ম্য ।
- দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা ।
- নতুন জমিদার শ্রেণির উদ্ভব ।
৩) দ্বৈত শাসন কী?
উত্তরঃ এটি এক ধরনের শাসন ব্যবস্থা। দ্বৈত বলতে বুঝায় দুইজনের শাসন।
১৭৬৫ মোগল সম্রাট শাহ আলম এর কাছ থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার রাজস্ব আদায়ের অধিকার লাভ করে । অপরদিকে তৎকালীন নবাব নিজাম উদ দৌলা আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও ফৌজদারি মামলার দায়িত্ব লাভ করেন।
এর মাধ্যমে কোম্পানি হয়ে ওঠে বাংলার প্রকৃত কর্তা এবং নবাব পরিণত হয় নামে মাত্র শাসক এবং বাংলার নবাব সামান্য বৃত্তিভোগী কর্মচারীতে পরিণত হন। নবাব লাভ করেন ক্ষমতাহীন দায়িত্ব আর ইংরেজরা পায় দায়িত্বহীন ক্ষমতা ইহাই দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত।
৪) দস্তক’ বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট ফারুক শিয়ারের ‘ফরমান’ অনুযায়ী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা-বিহার-ওড়িশায় বাৎসরিক ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে বাণিজ্য করার অনুমতি লাভ করে। এই ফরমান অনুযায়ী কোম্পানি বাংলায় বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার ছাড়পত্র বা অনুমতি পায় একেই বলে দস্তক।
৫) দেওয়ানি বলতে কি বোঝো ?
উত্তরঃ বক্সারের যুদ্ধে পরাজয়ের পর প্রায় সমগ্র উত্তর ভারত জুড়ে ইংরেজদের একছত্র আধিপত্য স্থাপনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এই অবস্থায় ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগষ্ট ক্লাইভ এলাহাবাদের প্রথম চুক্তিতে ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কারা ও এলাহাবাদ প্রদেশ ছাড়া সমগ্র অযোধ্যা সুজা-উদ-দৌলাকে ফিরিয়ে দেওয়া দেয় । ক্লাইভ শাহ আলমকেও ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগষ্ট এলাহাবাদের দ্বিতীয় চুক্তি করে দিল্লির সিংহাসন ফিরিয়ে দেন।
ইংরেজদের প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রমান স্বরূপ কারা ও এলাহাবাদের বিনিময়ে এবং বাৎসরিক ২৬ লক্ষ টাকার করদানের শর্তে দ্বিতীয় শাহআলাম ইংরেজদের বাংলা, বিহার ও ওড়িশার দেওয়ানি অর্থাৎ রাজস্ব আদায়ে অধিকার দেন।এই ঘটনা দেওয়ানি নামে পরিচিত।
৬) ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কবে কার কাছ থেকে দেওয়ানি লাভ করেছিল?
উত্তরঃ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৬৫ সালে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার, এবং উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করেছিল।
আঞ্চলিক শক্তির উত্থান | অষ্টম শ্রেণী | ইতিহাস
৭) ফারুখশিয়ারের ফরমান কি?
উত্তরঃ ফারুখশিয়ারের ফরমান ছিল মুঘল সম্রাট ফররুখশিয়ারের জারি করা একটি অনুদান বা ফরমান। এই ফরমানের মাধ্যমে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলা, বিহার, ও উড়িষ্যায় বিনা শুল্কে বাণিজ্যের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
ফারুখশিয়ারের ফরমানের গুরুত্বঃ
- এই ফরমানের মাধ্যমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মুঘল সাম্রাজ্যে বসবাস ও বাণিজ্য করতে পেয়েছিল।
- এই ফরমানের মাধ্যমে কোম্পানিকে কর ও শুল্ক পরিশোধ এড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছিল ।
- কোম্পানি বার্ষিক ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলায় বিনা শুল্কে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য করতে পেয়েছিল।
৮) পলাশীর যুদ্ধের কারণগুলি লিখ ।
উত্তরঃ ১৮৫৭ সালের ২৩ শে জুন পলাশীর প্রান্তরে ব্রিটিশদের সঙ্গে বাংলার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার মধ্যে যে পলাশীর যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল তার পিছনে বিভিন্ন কারণ ছিল। সেগুলি হল -
- আলীবর্দির মৃত্যুর পর তাঁর কনিষ্ঠ কন্যা আমিনা বেগমের পুত্র সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার নবাব হন। কিন্তু প্রথম থেকেই ইংরেজদের সঙ্গে মতান্তরের কারণে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত করেছে।
- সিংহাসনে বসার পর ইংরেজরা প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী সিরাজকে কোনো উপঢৌকন পাঠাননি। এর ফলে সিরাজ ইংরেজদের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্ট হয়।
- সিরাজ জানতে পারেন যে, ইংরেজরা সিরাজের প্রতিদ্বন্দ্বী সৌকত জঙ্গকে সাহায্য দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি করেন। এর ফলে নবাব ইংরেজদের বিরুদ্ধে রুষ্ট হন।
- ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় বিনাশ হল কে যে বাণিজ্যিক অধিকার লাভ করেছিল তা কোম্পানির কর্মচারীদের ব্যবহার করতে দিলে তারা তা অপব্যবহার শুরু করে। এর ফলে দেশীয় ব্যবসায়ীরা ও নবাব অর্থনৈতিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
৯) বর্গী কাদের বলা হয়?
উত্তরঃ বর্গী বলতে মারাঠা সাম্রাজ্যের অশ্বারোহী ভাড়াটেদের বোঝায়। মারাঠি ভাষায় এদের বলা হতো 'বারগির'। সম্রাট তাঁদের ঘোড়া ও অস্ত্রশস্ত্র জোগাতেন। বাংলায় মারাঠা আক্রমণের সময় বর্গীরা বাংলা সুবাহের পশ্চিম অংশে লুণ্ঠন চালিয়েছিল। বাংলায় মারাঠা আক্রমণকে বর্গির হাঙ্গামা বলা হয়।
১০) সিরাজউদ্দৌলা কবে বাংলার সিংহাসনে বসেন?
উত্তরঃ সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের সিংহাসনে বসেন।