![]() |
| গল্পবুড়ো, সুনির্মল বসু |
গল্পবুড়োসুনির্মল বসু
বইছে হাওয়া উত্তুরে;
গল্পবুড়ো থুথুড়ে
চলছে হেঁটে পথ ধ'রে-
শীতের ভোরে সত্বরে;
চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা
'রূপকথা চাই, রূপকথা—'
ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে-
বলছে ডেকে হাঁক ছেড়ে-
'ঘুম ছেড়ে আজ ওঠ তোরা,
আয় রে ছুটে ছোট্টরা-
কী আছে মোর তল্পিটায়
দেখবি যদি জলদি আয়।
কাঁধের উপর এই ঝোলা-
গল্প-ভরা মন ভোলা,
দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ,
রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ,
মনপবনের দাঁড়খানা-
আজগুবি সব কারখানা-
ভর্তি আমার তল্পিটায়,
দেখবি যদি, জলদি আয়।
কড়ির পাহাড় সার-বাঁধা-
মানিক-হীরা চোখ ধাঁধা-
সোনার কাঠি ঝলমলে,-
ময়নামতী টলটলে-
তেপান্তরের মাঠখানা-
হট্টমেলার হাটখানা-
আটকাল এই তল্পিটায়,
দেখবি যদি জলদি আয়।
কেশবতী নন্দিনী
এই থলেতে বন্দিনি।
শীতের প্রখর প্রত্যুষে-
আসবে না যে শত্রু সে-
ভাঙব তাদের মূর্খতা-
বলব নাকো রূপকথা।
🌿 গল্পবুড়ো — সুনির্মল বসু
🕯️ লাইন ধরে অর্থ (Line by Line Meaning)
বইছে হাওয়া উত্তুরে;
→ উত্তরের দিক থেকে ঠান্ডা হাওয়া বইছে।
গল্পবুড়ো থুথুড়ে, চলছে হেঁটে পথ ধ'রে— শীতের ভোরে সত্বরে;
→ এক বুড়ো মানুষ, যাকে সবাই গল্পবুড়ো বলে, ঠান্ডা শীতের সকালে তাড়াতাড়ি পথে হাঁটছে।
চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা, ‘রূপকথা চাই, রূপকথা—’
→ সে এত জোরে চেঁচাচ্ছে যে মুখ ব্যথা হয়ে গেছে, সে বলছে— “রূপকথা চাই, রূপকথা!”
ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে— বলছে ডেকে হাঁক ছেড়ে—
→ গল্পবুড়ো জোরে জোরে ডাকছে, হাঁক ছেড়ে সবাইকে জাগাচ্ছে।
‘ঘুম ছেড়ে আজ ওঠ তোরা, আয় রে ছুটে ছোট্টরা—
→ সে বলছে, “হে বাচ্চারা, ঘুম থেকে ওঠো, দৌড়ে এসো।”
কী আছে মোর তল্পিটায়, দেখবি যদি জলদি আয়।’
→ “আমার তল্পিতে (থলেতে) কী আছে দেখতে চাও? তাহলে তাড়াতাড়ি এসো।”
কাঁধের উপর এই ঝোলা— গল্প-ভরা মন ভোলা,
→ তার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে ভরা আছে গল্প, আর সে মনভোলা মানুষ।
দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, মনপবনের দাঁড়খানা— আজগুবি সব কারখানা—
→ তার গল্পে আছে দানব, যক্ষ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ (ডানা-ওয়ালা ঘোড়া), মনপবনের দণ্ড— সব আজব জিনিস।
ভর্তি আমার তল্পিটায়, দেখবি যদি, জলদি আয়।
→ “আমার থলেতে এগুলোই ভরা আছে, দেখতে হলে তাড়াতাড়ি এসো।”
কড়ির পাহাড় সার-বাঁধা— মানিক-হীরা চোখ ধাঁধা— সোনার কাঠি ঝলমলে,— ময়নামতী টলটলে—
→ “আমার ঝোলায় আছে কড়ির পাহাড়, মানিক-হীরার ঝলক, সোনার কাঠি, টলটলে ময়নামতী (রূপকথার চরিত্র)।”
তেপান্তরের মাঠখানা— হট্টমেলার হাটখানা— আটকাল এই তল্পিটায়, দেখবি যদি জলদি আয়।
→ “তেপান্তরের মাঠ আর হট্টমেলার হাট— সব আমার তল্পির মধ্যে আটকে আছে!”
কেশবতী নন্দিনী এই থলেতে বন্দিনি।
→ সুন্দরী কেশবতী নন্দিনীও এই থলেতে বন্দী আছে।
শীতের প্রখর প্রত্যুষে— আসবে না যে শত্রু সে— ভাঙব তাদের মূর্খতা— বলব নাকো রূপকথা।
→ “এই কঠিন শীতের সকালে যারা আসবে না, যারা মূর্খতার ঘোরে ঘুমিয়ে আছে— তাদের আমি কোনো রূপকথা বলব না।”
🌼 গল্পবুড়ো কবিতার সারাংশ (Summary in Bengali):
শীতের ভোরে উত্তরের হাওয়া বইছে। তখন গল্পবুড়ো নামের এক বৃদ্ধ পথে হাঁটছে। তার মুখে একটাই কথা— “রূপকথা চাই, রূপকথা!”
সে ডাকছে— “হে ছোট্টরা, ঘুম থেকে ওঠো! আমার তল্পিতে ভরা আছে আশ্চর্য সব গল্প।”
সে বলছে, তার ঝোলার মধ্যে আছে দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, মনপবনের দণ্ডখানা— সব আজগুবি কল্পনার জিনিস।
আরও আছে সোনার কাঠি, ময়না-মতী, মানিক-হীরা, তেপান্তরের মাঠ আর হট্টমেলার হাটখানা।
শেষে সে বলে, তার তল্পিতে বন্দিনী আছে কেশবতী নন্দিনী, এবং সে ঘোষণা দেয়— “যারা মূর্খতা ভাঙবে না, যারা কল্পনার জগৎ বুঝবে না, তাদের আমি রূপকথা বলব না।”
🌸গল্পবুড়ো কবিতার মূল ভাব (Central Idea):
‘গল্পবুড়ো’ কবিতাটি কল্পনা, রূপকথা ও শিশুমনের জাদুকরী আনন্দের প্রতীক।
গল্পবুড়ো সেই কল্পনার দূত, যে শিশুদের ঘুমন্ত মনকে জাগিয়ে তোলে গল্পের মাধ্যমে।
কবিতার মাধ্যমে কবি বোঝাতে চেয়েছেন—
👉 কল্পনা ও গল্পই শিশুদের মনকে জাগিয়ে তোলে, শেখায় স্বপ্ন দেখতে।
👉 যারা এই কল্পনার মূল্য বোঝে না, তারা জীবনের আনন্দ ও সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত হয়।
১. ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখ:
১.১. উত্তুরে হাওয়া বলতে বোঝায় হাওয়া যখন উত্তর দিক থেকে বয়ে আসে। এমনভাবে (গ্রীষ্ম/ শরৎ। শীত/ বর্ষা) কালে হাওয়া বয়।
উত্তর- শীত।
১.২. থুথুরে শব্দটির অর্থ_(চনমনে/জড়োসড়ো/ জ্ঞানী/ নড়বড়ে)
উত্তর- নড়বড়ে।
১.৩. রূপকথার গল্পে যেটি থাকে না__ (দৈত্য দানব/ পক্ষীরাজ/রাজপুত্তুর। উড়োজাহাজ)।
উত্তর- উড়োজাহাজ।
১.৪. রূপকথার গল্প সংগ্রহ করেছেন এমন একজন লেখক এর নাম বেছে নিয়ে লেখো। (আশাপূর্ণা দেবী। দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার। সত্যজিৎ রায়/শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)।
উত্তর- দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার।
২.১. লেখালেখি ছাড়াও সুনির্মল বসু আর কোন কাজ ভালো পারতেন?
উত্তর- ছবি আঁকতে পারতেন।
২.২. তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর- তার লেখা দুটি বইয়ের নাম হল- ছানাবড়া ও বীর শিকারি।
৩. এলোমেলো বর্ণগুলি কে সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো:
থা রু ক প;
উত্তর- রূপকথা।
র ত্তু জ রা পু;
উত্তর- রাজপুত্তুর।
জ ক্ষী রা প;
উত্তরঃ - পক্ষীরাজ।
ব প ম ন ন;
উত্তর- মনপবন।
জ গু বি আ;
উত্তর- আজগুবি।
৪) অন্ত্যমিল আছে এমন পাঁচজোড়া শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখ। একটি করে দেওয়া হলো। উদাহরণ বাঁধা, ধাঁধা।
উত্তর- ১) উত্তুরে, থুথুরে
২) ঝোলা, ভোলা
৩) যক্ষীরাজ, পক্ষীরাজ
৪) নন্দিনী বন্দিনী
৫) ঝলমলে, টলটলে।
৫ বাক্য বাড়াওঃ
৫.১ শীতকালে হাওয়া বইছে। (কেমন হওয়া)
উত্তর- শীতকালে উত্তুরে হাওয়া বইছে।
৫.২ গল্পবুড়ো ডাকছে (কেমন বুড়ো?)
উত্তর- থুথুরে গল্পবুড়ো ডাকছে।
৫.৩) গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা। (মুখ ব্যথা কেন ?)
উত্তর- চেঁচিয়ে ডাক পেড়ে গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা।
৫.৪) গল্পবুড়োর ঝোলা আছে। (কোথায় ঝোলা ?)
উত্তর- গল্পবুড়োর কাঁধে ঝোলা আছে।
৫.৫) দেখবি যদি, আয়। (কীভাবে আসবে?)
উত্তর- দেখবি যদি জলদি আয়।
৬) স্তম্ভ মিলঃ
|
ক |
খ |
|
তল্পি |
ঝোলা |
|
রূপকথা |
কাল্পনিক
গল্প |
|
ভোরে |
বিহানে |
|
পবন |
বাতাস |
|
সত্ত্বর |
দ্রুত |
৭) 'ডাকছে রে'আর 'ডাক ছেড়ে' শব্দ জোড়ার মধ্যে কি পার্থক্য তা দুটি বাক্য রচনা করে দেখাও।
উদাহরণ- বাছুরটি ডাক ছেড়ে মাকে ডাকছে রে।
উত্তর- ডাক ছেড়ে ছোট ছেলেটা ডাক ছেড়ে কাঁদছে।
ডাকছে রে - রবিকে তার মা ডাকছে রে।
৮) শব্দ ঝুড়ি থেকে নিয়ে বিশেষ্য ও বিশেষণ আলাদা করে লেখো।
উত্তর- বিশেষ্য - তল্পি, ঝোলা, শীত, রাজপুত্তুর, কারখানা,
বিশেষণ- উত্তুরে, থুথুরে, আজগুবি, জলদি, সত্বর।
৯) পক্ষীরাজ এর মতো (ক্+ষ= ক্ষ) রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ তৈরি করো।
উত্তর- বৃক্ষ, শিক্ষা, রক্ষা, পক্ষ, পরীক্ষা।
১০) ক্রিয়ার নিচে দাগ দাও।
১০.১) বইছে হাওয়া উত্তুরে।
১০.২) ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে।
১০.৩) আয়রে ছুটে ছোট্টরা।
১০.৪) দেখবি যদি জলদি আয়।
১০.৫) চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা।
১২ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো
১২.১ গল্পবুড়ো কখন গল্প শোনাতে আসে?
উত্তর : শীতের ভোরে ।
১২.২ গল্পবুড়োর ঝোলায় কী কী ধরনের গল্প রয়েছে?
উত্তর-গল্পবুড়োর ঝোলায় দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ যেমন আছে তেমন ঝলমলে সোনার কাঠি, ময়নামতী নদী, তেপান্তরের মাঠ, কেশবর্তী নন্দিনী ইত্যাদি নিয়ে রূপকথার গল্প গল্পবুড়োর ঝোলায় বন্দি আছে।
১২.৩ গল্পবুড়ো শীতকালের ভোরে ছোটোদের কীভাবে ঘুম থেকে ওঠাতে চায় ?
উত্তর- শীতকালের ভোরে গল্পবুড়ো পথ দিয়ে যেতে যেতে ডাক পেড়ে গল্প বলে ছোটোদের ঘুম থেকে ওঠাতে চায়।
১২.৪ রূপকথা'র কোন্ কোন্ বিষয় কবিতাটিতে রয়েছে?
উত্তর- গল্পবুড়োর কাঁধের ঝোলায় রূপকথার দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, ঝলমলে সোনার কাঠি, ময়নামতী নদী, তেপান্তরের মাঠ, কেশবতী নন্দিনী সবই বন্দি আছে।
১২.৫ গল্পবুড়ো কাদের তার গল্প শোনাবে না?
উত্তর- যারা গল্পবুড়োর শত্রু, যারা মূর্খ, অলস তাদের গল্প শোনাবে না।
🌸অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর (Questions & Answers)
১. কবিতাটির নাম কী ও কবির নাম কে?
→ কবিতার নাম “গল্পবুড়ো” এবং কবি সুনির্মল বসু।
২. গল্পবুড়ো কেমন সময় পথে বেরিয়েছে?
→ শীতের ভোরে, উত্তরের হাওয়া বইছে— এমন সময় সে পথে বেরিয়েছে।
৩. গল্পবুড়ো কী বলছে?
→ সে বলছে— “রূপকথা চাই, রূপকথা।”
৪. গল্পবুড়ো কাদের ডাকছে?
→ গল্পবুড়ো ছোটদের ডাকছে— “ঘুম থেকে ওঠো, ছুটে এসো।”
৫. গল্পবুড়োর তল্পিতে কী কী আছে?
→ তার তল্পিতে আছে দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, মনপবনের দণ্ড, মানিক-হীরা, সোনার কাঠি, ময়নামতী, তেপান্তরের মাঠ ও হাটখানা— নানা রকম রূপকথার জিনিস।
৬. গল্পবুড়ো কাদের গল্প বলবে না বলে?
→ যারা মূর্খতার ঘোরে ঘুমিয়ে থাকবে, তাদের সে রূপকথা বলবে না।
৭. কবিতার মূল ভাব কী?
→ গল্পবুড়ো শিশুমনের কল্পনা ও গল্পের জগৎকে জাগিয়ে তোলে। কবি দেখিয়েছেন, গল্প ও কল্পনার মাধ্যমে শিশুরা আনন্দ, শিক্ষা ও স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করে।
📗 বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (MCQ Questions)
১. ‘গল্পবুড়ো’ কবিতার কবি কে?
ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
খ) সুনির্মল বসু ✅
গ) সুকুমার রায়
ঘ) জীবনানন্দ দাশ
২. গল্পবুড়ো কখন পথে বেরিয়েছিল?
ক) গ্রীষ্মের দুপুরে
খ) শীতের ভোরে ✅
গ) বর্ষার রাতে
ঘ) শরতের বিকেলে
৩. গল্পবুড়ো কোন দিকের হাওয়ায় হাঁটছিল?
ক) পশ্চিমে
খ) দক্ষিণে
গ) উত্তুরে ✅
ঘ) পূর্বে
৪. গল্পবুড়োর তল্পিতে কী ছিল না?
ক) রাজপুত্তুর
খ) যক্ষিরাজ
গ) নদী আর পাহাড় ✅
ঘ) দত্যি-দানব
৫. গল্পবুড়ো কাদের ডেকে বলেছিল “ঘুম ছেড়ে আজ ওঠ তোরা”?
ক) বৃদ্ধদের
খ) ছোট্টদের ✅
গ) রাজাদের
ঘ) দানবদের
৬. গল্পবুড়ো কাদের গল্প বলবে না?
ক) যারা গল্প জানে
খ) যারা আসবে না ✅
গ) যারা হাসবে
ঘ) যারা ভয় পায়
৭. ‘কেশবতী নন্দিনী’ কে?
ক) গল্পবুড়োর মেয়ে
খ) এক রূপকথার চরিত্র ✅
গ) রাজপুত্রের বোন
ঘ) গ্রামের এক মেয়ে
৮. গল্পবুড়ো কোন জিনিসে তার গল্প বহন করে?
ক) পেটিকায়
খ) তল্পিতে ✅
গ) বইয়ে
ঘ) ঝুড়িতে
✏️ ছোট রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
১. গল্পবুড়ো কে?
→ গল্পবুড়ো এক বৃদ্ধ মানুষ, যে রূপকথা ও কল্পনার জগৎ নিয়ে ছোটদের আনন্দ দিতে আসে।
২. গল্পবুড়োর তল্পিতে কী কী ছিল?
→ তার তল্পিতে ছিল দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, মানিক-হীরা, সোনার কাঠি, ময়নামতী ও তেপান্তরের মাঠ।
৩. গল্পবুড়ো কেন ডাক দিচ্ছিল?
→ সে চাইছিল শিশুরা ঘুম থেকে উঠে তার গল্প শুনতে আসুক।
৪. কবি এই কবিতার মাধ্যমে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
→ কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে গল্প ও কল্পনার জগৎ শিশুর মনে আনন্দ, কৌতূহল ও সৃজনশীলতা জাগায়।
৫. গল্পবুড়ো কেন রূপকথা বলবে না বলে?
→ যারা কল্পনা বোঝে না বা ঘুমিয়ে থাকে (অলস ও উদাসীন), তাদের সে রূপকথা বলবে না।
✨ ১. বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (MCQ) — ১ × ১০ = ১০ নম্বর
১. গল্পবুড়ো কোন ঋতুর সকালে পথে বেরিয়েছিল?
ক) বর্ষা খ) শীত ✅ গ) গ্রীষ্ম ঘ) শরৎ
২. গল্পবুড়ো কাদের ডাকছে?
ক) দানবদের খ) ছোটদের ✅ গ) রাজাদের ঘ) পাখিদের
৩. গল্পবুড়ো কী বলছিল?
ক) রূপকথা চাই ✅ খ) ঘুমাতে দাও গ) খেলতে চলো ঘ) বই পড়ো
৪. গল্পবুড়োর তল্পিতে কী ভরা?
ক) গল্প ✅ খ) ফল গ) ফুল ঘ) বই
৫. ‘মনপবনের দাঁড়খানা’ কথাটির মানে কী?
ক) বাতাসে চলা জাহাজ ✅ খ) রাজকুমার
গ) দানব ঘ) যক্ষিরাজ
৬. গল্পবুড়ো কেন মুখ ব্যথা পেয়েছিল?
ক) চেঁচিয়ে বলার জন্য ✅ খ) দৌড়ানোর জন্য
গ) ঠান্ডা হাওয়ায় ঘ) গল্প বলার জন্য
৭. গল্পবুড়ো কাদের গল্প বলবে না?
ক) যারা ঘুমায় ✅ খ) যারা হাসে
গ) যারা খেলছে ঘ) যারা গল্প জানে
৮. ‘কেশবতী নন্দিনী’ কে?
ক) এক রূপকথার চরিত্র ✅ খ) গল্পবুড়োর স্ত্রী
গ) গ্রামের মেয়ে ঘ) রাজকন্যার বন্ধু
৯. ‘তল্পি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক) ঝোলা বা ব্যাগ ✅ খ) বাক্স
গ) হাঁড়ি ঘ) ডালায়
১০. কবি ‘গল্পবুড়ো’ কবিতায় কাকে প্রতীক করে তুলেছেন?
ক) বাস্তবতা খ) কল্পনা ও রূপকথার জগৎ ✅
গ) ইতিহাস ঘ) বিজ্ঞান
✍️ ২. সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (Short Questions) — ৩ × ৫ = ১৫ নম্বর
১. গল্পবুড়ো দেখতে কেমন মানুষ ছিল?
→ গল্পবুড়ো এক বুড়ো মানুষ, থুথুড়ে, শীতের সকালে হাঁটছে গল্পভরা তল্পি নিয়ে।
২. গল্পবুড়ো কেন ছোটদের ডাক দিচ্ছিল?
→ সে চাইছিল শিশুরা ঘুম থেকে উঠে তার রূপকথার গল্প শুনুক।
৩. গল্পবুড়োর তল্পিতে কী কী ছিল?
→ দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, মানিক-হীরা, সোনার কাঠি, ময়নামতী ও তেপান্তরের মাঠ।
৪. কবি এই কবিতার মাধ্যমে কী শিক্ষা দিতে চেয়েছেন?
→ কবি বোঝাতে চেয়েছেন, কল্পনা ও গল্পের জগৎ শিশুর মনকে জাগিয়ে তোলে এবং জীবনকে আনন্দময় করে।
৫. গল্পবুড়ো কেন বলেছিল “বলব নাকো রূপকথা”?
→ যারা উদাসীন, মূর্খতার ঘোরে ঘুমিয়ে থাকে— তাদের সে গল্প বলবে না।
🖋️ ৩. রচনামূলক প্রশ্ন (Descriptive Questions) — ৫ × ২ = ১০ নম্বর
১. “গল্পবুড়ো” কবিতার গল্পবুড়ো চরিত্রটির বর্ণনা দাও।
→ গল্পবুড়ো এক রূপকথার চরিত্র, যিনি শীতের সকালে গল্পভরা তল্পি নিয়ে বেরিয়েছেন। তিনি শিশুদের ডাকছেন— “ঘুম ছেড়ে ওঠো, রূপকথা শুনো।” তার ঝোলায় আছে দত্যি, দানব, রাজপুত্র, পক্ষীরাজ ও নানা জাদুকরী জিনিস। গল্পবুড়ো কল্পনা ও শিশুমনের আনন্দের প্রতীক।
২. গল্পবুড়োর তল্পির ভেতরের জিনিসগুলোর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
→ তল্পির ভেতরে থাকা দত্যি, দানব, রাজপুত্তুর, হীরা, সোনার কাঠি— সবই কল্পনা ও স্বপ্নের প্রতীক। এগুলো শিশুমনের কৌতূহল, বিস্ময় ও আনন্দের প্রতিফলন। কবি বোঝাতে চেয়েছেন— গল্পের ভেতরেই লুকিয়ে আছে শিক্ষার আনন্দ ও কল্পনার শক্তি।
🌼 ৪. মূল ভাব / সারসংক্ষেপ (Central Idea or Summary) — ১৫ নম্বর
মূল ভাব:
“গল্পবুড়ো” কবিতায় কবি সুনির্মল বসু এক মনভোলা বুড়োর মাধ্যমে গল্প ও কল্পনার জগৎকে জীবন্ত করে তুলেছেন।
গল্পবুড়ো শিশুদের ডাকছে রূপকথার আহ্বানে। তার ঝোলায় আছে দত্যি, দানব, রাজপুত্র, পক্ষীরাজ— সব আজব চরিত্র, যেগুলো শিশুর মনে আনন্দ ও কৌতূহল জাগায়।
কবি বোঝাতে চেয়েছেন, কল্পনা ও গল্পই শিশুমনের সৃষ্টিশীলতা জাগিয়ে তোলে। যারা কল্পনা বোঝে না বা অলস থাকে, তারা জীবনের সৌন্দর্য অনুভব করতে পারে না।
এই কবিতা কেবল শিশুদের নয়, সকল মানুষের মনেও কল্পনা ও স্বপ্নের গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।
সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকের পাঠ এখানেই শেষ করছি। আগামী পর্বে আমরা অন্য পাঠে নতুনভাবে নতুন রুপে তোমাদের সামনে হাজির হব। ততক্ষণে ভালো থেকো সুস্থ থেকো , ধন্যবাদ।।

